স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল এগারোটায় জেলা পরিষদ হল রুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার নাসরিন আক্তারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস, জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুচিত্রা রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা জেরিন, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, ক্যাব সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী, সাংবাদিক খলিল রহমান, শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র দাস, সাজ্জাদ হোসেন, শিক্ষার্থী নুসরাত সিদ্দিকা তাহা এবং দিবস তালুকদার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপশ শীল এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। জেলা মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় ৩ টি ক্যাটাগরিতে ২৪০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিকে ২৫ জন শিক্ষার্থী এবং মাধ্যমিকে ৮ জন শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৩ জন শিক্ষার্থী বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়। এরমধ্যে পঞ্চম শ্রেণীতে ২৫ জনের মধ্যে ৩ জন ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে, আর সাধারণ গ্রেডে ২২ জন শিক্ষার্থীকে ১২ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এছাড়া অষ্টম শ্রেণীর ৮ জনের মধ্যে ১ জন ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পায়। ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্তকে ২৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। সাধারণ বৃত্তি প্রাপ্ত ৭ জনের প্রত্যেককে ১৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। প্রাথমিকের ৩ জন ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয় এবং সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে ২২ জন। তাদের প্রত্যেককে ১২ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, আজকে যারা মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা আগামী দিনে আমাদের দায়িত্ব নিবে। আমরা যারা বয়সী হবো, বৃদ্ধ হবো, চলাফেরা করতে পারবো না। আজকে জেলা পরিষদ মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্তরা আমার সামনে উপস্থিত। এই কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য আমি তাদেরকে অন্তর থেকে অভিবাদন জানাই। সুনামগঞ্জের শিক্ষার মান নিয়ে ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জের শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে আছে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে শিক্ষার দিক দিয়ে ৬৩ নম্বরে। আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই। এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, এ প্লাস অনেকেই পেয়ে থাকে, কিন্তু, দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকেই চান্সই পায়না। এইজন্য আমার কাছে মনে হলো যে, মাধ্যমিক এবং প্রাথমিকের রেজাল্ট মানদ- না, যেকারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে একটা পরীক্ষা নেব। তিনি বলেন, এই বৃত্তি পরীক্ষা নিতে গিয়ে একটা আশঙ্কা ছিল। আমি যখন বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকার তখন এই বৃত্তি পরীক্ষা নিবে কি না, সেই আশঙ্কা করছিলাম। আমি আশঙ্কামুক্ত হয়েছি, সরকারও স্কলারশিপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করি, যারা প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা দিবে, এই পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করেছে, তাদের একটা প্র্যাকটিস হয়ে গেলো। তারা অনুপ্রাণিত হবে ভালো ফলাফল করার জন্য। আমার ইচ্ছেটা তা-ই ছিল। শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করাই হচ্ছে আমার মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম যে, অনেক শিক্ষার্থী বৃত্তি পাবে, সেই অনুযায়ী আমরা বাজেট রেখেছিলাম। যখন দেখলাম, শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ বৃত্তি পায়নি, ৬০% এর উপরে প্রাথমিকে বৃত্তি পেয়েছে ২৫ জন এবং মাধ্যমিকে মাত্র ৮ জন। এটা সুনামগঞ্জের জন্য হতাশাব্যাঞ্জক একটা চিত্র। আমরা এই চিত্রের পরিবর্তন করতে চাই। আমরা আশা করি, যারা বৃত্তি পেয়েছে, তারা তাদের বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছে প্রচার করবে এবং সংবাদ মাধ্যমে সাংবাদিকরা প্রচার করবে। এর মাধ্যমে সুনামগঞ্জে শিক্ষার প্রসার ঘটবে। সুনামগঞ্জে একটা নবজাগরণ সৃষ্টি হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া আরও বলেন, আমরা এই পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের একজন টেলেন্টেপুলে বৃত্তি পেয়েছে, আমরা তাকে দিয়েছি ২৫ হাজার টাকা। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনজন টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে, আমরা তাদেরকে ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছি। আর, সাধারণ বৃত্তি প্রাথমিক পর্যায়ে ১২ হাজার টাকা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। আমরা চাই, সুনামগঞ্জের শিক্ষার্থীরা জানুক যে এইরকম একটা আয়োজন হয়। তারা যাতে প্রস্তুতি নিতে পারে, সারা বছর তারা যেন প্রস্তুতি নেয় এবং এই পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্ব অর্জন করে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
জেলা পরিষদ মেধাবৃত্তি প্রদান
শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক
- আপলোড সময় : ০২-০৯-২০২৫ ১১:৪৯:৪২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-০৯-২০২৫ ১১:৫৫:২২ অপরাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ